Blog

ফেসবুক অ্যাড টার্গেটিং ?

ফেসবুক অ্যাড টার্গেটিং কিভাবে কাজ করে? যারা ফেসবুক অ্যাডের সাথে জড়িত, হোক তারা ডিজিটাল মার্কেটার অথবা বিজনেস করছেন তাদের সবারই একটি বড় চিন্তা থাকে ফেসবুক অ্যাড টার্গেটিং নিয়ে কারন অ্যাড টার্গেটিং যদি সঠিক ভাবে করা না যায় তাহলে আপনি একটি অ্যাডের পিছনে যতই টাকা ঢালেন কোন আশানুরূপ ফলাফল পাবেন না। আর ফেসবুক টার্গেটিং করার আগে এটা সবার আগে বুঝতে হবে ফেসবুক অ্যাড টার্গেট কিভাবে কাজ করে যেমনঃ ফেসবুক কিভাবে ডাটা কালেক্ট করে, সেগুলো কিভাবে ফেসবুক টার্গেট এর ভিত্তিতে এপ্লাই করে।

✔✔ ফেসবুক ডাটা ট্র্যাকিং ফেসবুকে একজন ইউজার কী করে ফেসবুক তার সব কিছু রেকর্ড করে থাকে, আপনি কখন পোস্টে কি ধরনের পোস্টে লাইক দিচ্ছেন, কমেন্ট করছেন এবং একটি পোস্টের সাথে আপনার অন্যভাবে কিভাবে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। যারা ফেসবুক অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহার করছেন ফেসবুক তাদের লোকেশন ডাটা ট্র্যাক করতে পারছে এবং যখন ফেসবুকের পিক্সেলের কোড ওয়েবসাইটে যোগ করা হচ্ছে ফেসবুক সেই ওয়েবসাইটের ভিজিটরদের বিভিন্ন ভাবে ট্র্যাকিং করতে পারছে। শুধু তাই না ফেসবুকে যে কুইজগুলো আছে যেগুলো থার্ড পার্টি দ্বারা পরিচালিত হয় সেখান থেকেও ফেসবুক প্রতিটা কিউজে অংশগ্রহনকারির ডাটা সংরহ করতে পারে।

✔✔ একটি সফল ফেসবুক অ্যাড টার্গেটিং অডিয়েন্স। ফেসবুক টার্গেটিং কোন মুখস্থ ফর্মুলা নয় যে আপনি একই অ্যাড একই রকম ভাবে বারবার টার্গেট করে যাবেন, বিভিন্ন ভাবে ফেসবুকের অ্যাড টার্গেটিং করা উচিত। যেমন আপনি একটি বয়স রেঞ্জ ঠিক করে সেখানে তাদের ইন্টারেস্ট কি হতে পারে সেটা দিয়ে একটি অ্যাড সাঁজাতে পারেন। এখানে আপনি মাল্টি লেয়ারে অ্যাড দিতে পারেন তাহলে অ্যাডের অডিয়েন্স অনেক নির্দিষ্ট হবে কিন্তু এটাও চিন্তা করতে হবে যে এমন ভাবে লেয়ার করে অ্যাড দেয়া যাবে না সেখানে অডিয়েন্স সাইজ একদমই ছোট হয়ে যায়।
এই সব ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করে যখন আপনি A/B টেস্ট করবেন এবং দেখবেন কোন গ্রুপের মানষের কাছ থেকে আপনি ভালো রেস্পন্স পাচ্ছেন।

✔✔ কিভাবে কোল্ড অডিয়েন্স টার্গেট করবেন। সব সময় মার্কেটিং ফানেলের ব্যাপারটা মাইন্ডে রাখতে হবে, কোল্ড অডিয়েন্স তারা যারা আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানে না। এখানে বিভিন্ন ভাবে আপনি এই ধরনের মানুষকে টার্গেট করতে পারেন। মনে রাখবেন অনেক ভাবে ফেসবুকে অ্যাড টার্গেট করা যায় এবং টার্গেটিং ডাটা আপনি পরবর্তিতে কিভাবে সেটাপ করবেন সেটাও। নিচে কিছু উদাহারন দেয়ার চেস্টা করা হচ্ছে

১. লোকেশন ভিত্তিক টার্গেটিং –
আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস কারা কিনতে পারে সেটা চিন্তা করে আপনি লোকেশন ভিত্তিক টার্গেটিং করতে পারেন। আপনি এখানেও লেয়ার করতে পারেন। যেমন যারা সেই এলাকায় থাকে বনাম যারা সে এলাকায় ঘুরতে এসেছে অথবা অল্প কয়েকদিন হলো এসেছে। এরকম ভাবে আপনি আরো বিভিন্ন উপায়ে লোকেশন ভিত্তিক টার্গেট করতে পারেন, আপনি মনে করলেন আপনি আপনার অ্যাড সারা বাংলাদেশে দেখাবেন কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় দেখাবেন না সেটাও সম্ভব, এই স্ট্রাটেজি দিয়েও আপনি মাল্টি লেয়ার অথবা A/B টেস্টিং করে দেখতে পারেন।
২. ডেমোগ্রাফিক এর উপর ভিত্তি করে – আপনি বিভিন্ন ভাবে বয়স গ্রুপ, জেন্ডার এমন কি বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষকে টার্গেট করতে পারবেন।

৩. ইন্টারেস্ট ভিত্তিক টার্গেটিং- ইন্টারেস্ট ভিত্তিক টার্গেটিং ভীষণ জনপ্রিয়, আমাদের দেশে তো বটেই, এখানে আপনি আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসে যারা আগ্রহী হতে পারে সেটার উপর ভিত্তি করে ইন্টারেস্ট নির্বাচন করতে পারবেন, আপনি সফটওয়্যার ডেভেলোপমেন্ট সার্ভিস দেন তাহলে আপনার জন্য ইন্টারেস্ট হতে পারে “Software” “Software Development” আবার সব ইন্টারেস্টে যে “software” থাকতেই হবে এমনও না কিন্তু আপনি এখানে “Small business owner” রাখতে পারেন যাদের সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়, আপনি এখানে “Entrepreneurs” রাখতে পারেন যাদের সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়, কিন্তু উপরের মত আবারো বলছি এরা সেই অডিয়েন্স যারা আপনাকে আগে থেকে চেনে না,জানে না, তাই শুধু টার্গেটিং করলেই হবে না, আপনি যেহেতু তাদের কাছে নতুন তাই কিছু নতুন কিছু নিয়ে তাদের কাছে যেতে হবে।

৪. বিহেবিয়ার ভিত্তিক টার্গেটিং- এখান থেকে কনভার্শন রেটের পরিমান বাড়ার সম্ভাবনা আরো অনেক বেশি থাকে, আপনি ফেসবুকে ইউজার বিহেবিয়ারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ভাবে টার্গেট করতে পারবেন। যেমন যারা কল টু একশন বাটনে ক্লিক করে, যারা বিভিন্ন ডিভাইজ ব্যবহার করে আরো অনেক অপশন আছে, আপনাকে এগুলো জানতে হবে, শিখতে হবে।

৫. জব টাইটাল ভিত্তি করে- কে কি ধরনের টাইটালে জব করে তাদের উপর ভিত্তি করে অ্যাড টার্গেটিং করতে পারেন, তবে এখানে একটি সমস্যা দেখা যেতে পারে অনেকেই জাস্ট একটি ফেসবুক পেইজ ওপেন করেই অনেক বড় বড় টাইটাল দিয়ে রেখে দেয় তাদের তাদেরকে আভোয়েড করার জন্য জব টাইটেল যদি আমরা মাল্টিলেয়ারের ব্যবহার করি তাহলে সেটা কার্যকর হয়।
এরকম আরো বিভিন্ন উপায়ে আপনি কোল্ড অডিয়েন্স টার্গেট করতে পারেন, যেমন বাবা-মায়েদের লক্ষ্য করে, বিভিন্ন লাইফ ইভেন্ট লক্ষ্য করে, বিভিন্ন স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে, বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে এমন ইউজারদেরকে লক্ষ্য করে।

✔✔ কিভাবে ওয়ার্ম অডিয়েন্স টার্গেট করবেন

কোল্ড অডিয়েন্সের সময় মার্কেটিং ফানেলের কথা মনে রাখতে বলেছিলাম মনে আছে কি? ওয়ার্ম অডিয়েন্স হচ্ছে তারা যারা আপনার বিজনেস, ব্র্যান্ড সম্পর্কে ইতিমধ্যে জানে। সেটা বিভিন্ন ভাবে জানতে পারে, হয়তো সে আপনার ওয়েবসাইটে গিয়েছিলো, অথবা কোন অফলাইন ইভেন্টে আপনার লোগো, ব্যানার অথবা এক্টিভিটি দেখেছে, অথবা আপনি কোল্ড অডিয়েন্স টার্গেট করে তাদেরকে আপনার বিজনেসের কথা, ব্র্যান্ডের কথা জানিয়েছেন। ওয়ার্ম অডিয়েন্সকে রিমার্কেটিং অডিয়েন্সও বলা যেতে পারে।

কিভাবে করবেন এই রিমার্কেটিং?
১. টাইম টার্গেটিং- এটা করতে হলে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইটে পিক্সেল সেটাপ করে নিতে হবে, এরপর ফেসবুক যখন ইউজার ট্র্যাক করবে আপনি সময় নির্দিষ্ট করে অ্যাড টার্গেটিং করতে পারবেন যেমন শেষের ৩ দিন যারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে, অথবা শেষের ৩০ দিন যারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে এভাবে আপনি শেষের ১৮০ দিন যারা আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন এক্টিভিটি করেছে তাদের টার্গেট করতে পারবেন। এমনকি তারা আপনার ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ভাবে কোন জায়গায় গিয়েছে সেটা ফেসবুককে কম্যান্ড দিয়েও আপনি টার্গেটিং করতে পারবেন, আপনি চাইছেন না যারা আপনার ওয়েবসাইটে গিয়েই বের হয়ে গিয়েছে এমন মানুষ টার্গেট করতে, আপনি চাইছেন এমন মানুষ টার্গেট করতে যারা একটি মান সম্মত সময় কাটিয়েছে তাদেরকে টার্গেট করতে সেটাও সম্ভব, চাইছেন না গত ২ মাসে আপনার কাছ থেকে যারা প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস কিনেছে তাদের টার্গেট করতে সেটাও সম্ভব, মনে রাখবেন ফেসবুকের অ্যাড টার্গেটিং এমন একটি ফিচার যেখানে শত শত স্ট্রাটেজি ফলো করে আপনি অ্যাড টার্গেট করতে পারবেন।

২. ফেসবুক বিজনেস পেইজ টার্গেটিং- এটাও ওয়ার্ম অডিয়েন্স টার্গেটিং কারন আপনি তাদেরকে নিয়ে রি টার্গেতিং করতে চাইছেন যারা আপনার পেইজে লাইক দিয়েছে,ভিজিট করেছে, বিভিন্ন পোস্টে বিভিন্ন ভাবে এঙ্গেজ হয়েছে, অথবা আপনার পেইজে ইনবক্স করেছে ইত্যাদি, এটা ফেসবুক পিক্সেলের মত পাওয়ারফুল না হলেও মান সম্মত ওয়ার্ম অডিয়েন্স আপনি এই ধরনের টার্গেটিং থেকে পাবেন, এখানে আরেকটি সুবিধা হলো আপনি এখানে “And অথবা “Any” এই কন্ডিশনের মাধ্যমে ইউজারের মাল্টিপল বিহেবিয়ার টার্গেট করে অ্যাড দিতে পারবেন।

৩. বিজনেস এপের ডাটার মাধ্যমে টার্গেটিং করা- আপনার যদি এপ থাকে তাহলে সেটার বিভিন্ন এক্টিভিটি ইউজারদের টার্গেট করতে পারবেন, যেমন যারা আপনার এপ ওপেন করেছে, যারা আপনার এপে সব থেকে বেশি এক্টিভ অথবা এপ থেকে কোন কিছু কিনেছে।

৪.ইমেইল লিস্টের মাধ্যমে টার্গেট করা- ই মেইল লিস্টের মাধ্যমে ওয়ার্ম অডিয়েন্স টার্গেট করা চমৎকার একটি পদ্ধতি, আপনি আপনার কাস্টমারের ইমেইল এড্রেস ফেসবুকে আপলোড দিয়ে তাদেরকে অ্যাড দেখাতে পারবেন এবং যেহেতু তারা আপনাকে চিনে তাই কনভার্শন রেট বেশি হবার সম্ভাবনাও থাকবে। তাই যারা এখনো কাস্টমারের ইমেইল সংরহ করছেন না তারা আজই করা শুরু করে দিন, আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে ই মেইল সাবস্ক্রাইবার ফিচার ব্যাবহার করে এটা করতে পারেন।

৫. ভিডিও ভিউজের উপর টার্গেটিং- আগেও বলেছি ওয়ার্ম অডিয়েন্স হচ্ছে তারা যারা আপনাকে ইতিমধ্যে চিনেছে, আপনি প্রথমে একটি ভিডিও দিলেন, সেটা কোল্ড অডিয়েন্স টার্গেটিং করে দেখালেন, এখন সে ভিডিও যারা দেখলো সবাই আপনার ওয়ার্ম অডিয়েন্স কিন্তু সবাই ই কি মান সম্মত অডিয়েন্স, অনেকেই আছে যারা আপনার ৫ মিনিটের ভিডিও ৩ সেকেন্ড দেখেই বের হয়ে গেছে, অথবা ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও, তাদেরকে আপনার রিটার্গেটিং এ রেখে কিন্তু কোন লাভ নেই তাহলে আপনার রি টার্গেটিং স্ট্রাটেজিও কিন্তু সফল হলো না, আর ভিডিও ভিউজের ইউজারদের আপনি বিভিন্ন ভাবে ফিল্টার করতে পারবেন যারা ৩ সেকেন্ড দেখেছে, ১০ সেকেন্ড দেখেছে, ৫০% দেখেছে ‌৯৫ % দেখেছে এমন অডিয়েন্স দিয়েও আপনি আলাদা আলাদা ভাবে টার্গেটিং সাঁজাতে পারবেন, এখানেও আপনি মাল্টি লেয়ার, অথবা A/B টেস্টিং করে দেখতে পারেন কোন গ্রুপের অডিয়েন্স থেকে আপনি ভালো রেজাল্ট পাচ্ছেন।

এভাবে আরো বিভিন্ন উপায়ে আপনি ওয়ার্ম অডিয়েন্স টার্গেটিং করতে পারবেন, আর মনে রাখবেন সেল জেনারেটের জন্য কোল্ড অডিয়েন্সের থেকে ওয়ার্ম অডিয়েন্স অনেক বেশি কার্যকরি।
এই লেখাটার উদেশ্য ছিলো এই যে আমরা অনেকেই একই রকম ফেসবুক টার্গেটিং এ আটকে গেছি, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে ফেসবুকে আছি কিন্তু অনেকেই অনেক অ্যাডের কথা জানেই না, আর না জানার ফলে ফেসবুক অ্যাড থেকে ভালো রেজাল্ট পাচ্ছি না। আর তার ফলে যেটা হচ্ছে ফেসবুক অ্যাড থেকে অনেকেই আস্থা হারাচ্ছি আর আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ফেসবুক অ্যাড অন্যতম বড় একটি জায়গা দখল করে রাখার ফলে অনেকে বিজনেস থেকেও সরে যাচ্ছি। উপরে ছোট করে আলোচনা করা চেস্টা করলাম, ফেসবুকের বিভিন্ন অডিয়েন্স এবং টার্গেটিং ট্রাটেজি নিয়ে, আশা করছি অনেকেরই কাজে আসবে। ধন্যবাদ।

আপনার নিজের বিজনেসের জন্য বা আপনার এজেন্সির জন্য ফেসবুক অথোরাইজ এড ম্যানাজারের প্রয়োজন হইলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন আমরা আপনাদের নিয়ে এসেছি ফেসবুক অথোরাইজ এড একাউন্ট, এই একাউন্ট গুলো সহজে ডিজেবল হয়না এবং মাস্টার কার্ডের কোনো ঝালেমা নেই এবং আপনার টার্গেটিং করতে সুভিধা হবে যেহেতু ফেসবুকের নিজের পেমেন্ট সিস্টেম। ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *